আমরা সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হলে কিংবা সরকারি/বেসরকারি পর্যায়ে উচ্চ পদে চাকুরী করলে আমাদের মধ্য এক ধরনের ভাব এসে যায়। আমরা নিজেদের অধিক ব্যক্তিত্ববান হিসেবে অনেক ক্ষেত্রে উপস্থাপনের চেষ্টা করি। আমরা আমাদের অতীত ভুলে গিয়ে পারিবারিক সামাজিক বংশগত সম্পর্কও ভুলে যাই। অথচ ফেলে আসা দিনগুলোতে সোনালি-শৈশব কৈশোর ও শিক্ষা জীবনে আমাদের সঙ্গে আত্নীয়-স্বজন পাড়া- প্রতিবেশী, সহপাঠী, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে কত…না অম্লমধুর সম্পর্ক ছিলো।
এঁরাই ছিলো আমাদের আবেগ অনুভূতি প্রকাশের জায়গা। সুখ-দুঃখ-হাসি কান্নার মাঝে এরাই ছিলো আমাদের আপনজন। আজ সামাজিক অবস্থানের কারণে গাঁও গ্রামের ধুলো মাটিতে বেড়ে ওঠেও আমরা শিকড়কে ভুলে যাই। আমাদের মধ্য এক ধরনের অহংবোধ তৈরী হওয়ার কারনে সামাজিকভাবে একটি ব্যবধান সৃষ্টি হয়। এই ব্যাবধান পেরিয়ে এসব মানুষদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ে।
কাদা মাটির গ্রাম ও মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নতুন ভাবনার জগতে পরিশীলিত ও ব্যক্তিত্ববান মানুষ হয়ে বেঁচে থাকার মধ্য কোন প্রকৃত সুখ নেই। নিজ পরিবার আত্নীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশি, সহপাঠী,বন্ধুবান্ধবদের দুঃখ ব্যথা যদি আমাদের তাড়িত না করে, আমরা পাশে না দাঁড়াই তাহলে ওই সামাজিক অবস্থান আর ব্যক্তিত্বকে আমি মনেপ্রাণে ঘৃনা করি।
আমাদের মানবিক,মননশীল মাটি ঘনিষ্ঠ মানুষ হতে হবে। পরিবার,সমাজ,আত্নীয়-স্বজন,পাড়াপ্রতিবেশী বন্ধু-বান্ধবদের দুঃখ কষ্ট হৃদয় দিয়ে বুঝতে হবে। মানুষের ব্যথা ও কান্নায় যখন আমার দু’নয়ন ভিজে উঠবে তখনই আমার জীবন স্বার্থক হবে। সেখানেই জীবনের নির্মল আনন্দ আর প্রকৃত সুখ খুজে পাওয়া যাবে।
নকিব তালুকদার
ভিয়েনা(অস্ট্রিয়া)