ভোলা সংবাদাতাঃ ভোলা-লক্ষীপুর রুটের ইলিশা ফেরীঘাটে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র লাইন জটের।তাতে কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কায় তরমুজ ব্যবসায়ী।
এদিকে ঘন্টার পর ঘন্টা এমনকি ২/৩ দিন অপেক্ষা করেও পার হতে পারছেনা পন্যবাহী যানবাহন। উভয় পাড়ে আটকা পড়েছে শতাধিক যানবাহন। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা।
নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে যেতে না পারায় পচে যাচ্ছে ব্যবসায়ীদের কাচামাল। ঘাটেই নষ্ট হতে চলছে প্রায় এক কোটি টাকার তরমুজ। এতে চরম ক্ষতির মুখে বেপারীরা। কবে ঘাটের এ জট খুলবে তাও জানেনা নেই তাদের।
নৌ পথে দেশের দীর্ঘতম ফেরী রুট হচ্ছে ভোলা-লক্ষীপুর ফেরী সার্ভিস। ভোলার সাথে দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সাথে যোগাযোগের সহজ মাধ্যম হচ্ছে এটি। তাই পন্য পরিবহনের জন্য এ রুটটিকে ব্যবহার করেন ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে এ রুটে চারটি ফেরী চললেও কিছুতেই যেন কমছে না লাইন জট। বিশেষ করে তরমুজসহ বিভিন্ন কাচামালবাহী পরিবহনের চাপ বেড়েছে। এতে ২ কিলোমিটার দীর্ঘ লাইন জটের সৃষ্টি হয়েছে ভোলার ইলিশা ঘাটে।
এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শ্রমিক ও তরমুজ ব্যবসায়ীরা। ইলিশা ফেরীঘাটে ৭০ ভাগ গাড়ীতেই রয়েছে প্রায় কোটি টাকার তরমুজ। গন্তব্যে যেতে না পারায় ওই সব তরমুজ নষ্টের উপক্রম। ট্রাক চালক ফজলে রাব্বী বলেন, চরফ্যাশনে থেকে তরমুজ নিয়ে সকাল ঘাটে অপেক্ষা করছি, কিন্তু পার হতে পারছি না।
অপর ট্রাক চালক মো: ফারুক বলেন, ট্রাকে ৫ লাখ টাকার তরমুজ, ৩ দিন ধরে ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছি কিন্তু পার হতে পারছি না। ওদিকে তরমুজ থেকে পানি বের হচ্ছে। এতে বেপারীদের তরমুজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
তরমুজের বেপারী মো: জোবায়ের ও সাজ্জাদ হোসেন বলেন, চরফ্যাশন থেকে তরমুজ কিনে তা ঢাকা ও চাঁদপুর বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু ঘাটে যানজটের কারনে যেতে পারছি না, দুই ট্রাকে প্রায় ১০ লাখ টাকার তরমুজ রয়েছে। নির্ধারিত সময়ে পার হতে না পারলে সব তরমুজ নষ্ট হয়ে যাবে।
জানা গেছে, যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে এক সপ্তাহ আগে এখাকার কলমিলতা ও কুসুমকলি নামে ২টি ফেরী বিকল থাকায় এ জটের সৃষ্টি হয়েছে. তবে ওই ফেরী দুটি সচল হলেও যেন পরিবহনের জট কমেনি। বর্তমানে চারটি ফেরী চলাচল করলেও যেন কিছুতেই এ জট কমাছে না।
শনিবার বিকালে ভোলার ইলিশা ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, পন্যবাহী পরিবহনের দীর্ঘ লাইন। এদের মধ্যে ৭০ ভাগ ট্রাক তরমুজ বোঝাই। ট্রাকের পাশেই অলস সময় কাটাচ্ছেন ট্রাকের চালক, শ্রমিক ও বেপারীরা।
তারা জানালেন, নির্ধারিত সময়ে তরমুজ পৌছাতে না পারলে ঘাটেই নষ্ট হয়ে যাবে কোটি টাকার তরমুজ। এ সময় দ্রুত জট কমানোর দাবী জানান তারা।
ফেরীঘাটের টার্মিনাল এসিসটেন্ট জহিরুল ইসলাম বলেন, দুইটি ফেরী বিকল থাকায় জট বেড়েছে, এখন চারটি ফেরী চলছে, উভয় পাড়ে প্রায় ২শ’ গাড়ী রয়েছে, আমরা দ্রুত জট কমানোর চেষ্টা করছি। তিনি বলেণ,ব্যবসায়ীদের কথা বিবেচনা করে অন্য গাড়ীর সাথে সমন্বয় করে তরমুজের গাড়ীগুলো দ্রুত পারাপার করা হচ্ছে।
জেলা কৃষি অফিস জানায়, এ বছর জেলায় ১১ হজার ২৪৯ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। এ সব তরমুজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে চলে যাচ্ছে বিভিন্ন জেলায়।