শিমুল চৌধুরীঃ
উপকূলীয় দ্বীপ জেলা ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কৃতি সন্তান বিশিষ্ট লেখক মাহবুব-উল-আলম চৌধুরীর বই “অহনা” ঢাকার বইমেলায় ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠছে। জনপ্রিয় হয়ে ওঠছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও। ফেসবুকে লেখক মাহবুব-উল-আলম চৌধুরীর “অহনা” বই নিয়ে নানান প্রশংসা করেছেন ফেসবুক ব্যবহারকারীরা।
সুমাইয়া বিথী নামে ভোলার মেয়ে মাহবুব-উল-আলম চৌধুরীর বই “অহনা” হাতে নিয়ে আজ মঙ্গলবার রাতে তার ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, “একের ভেতর সব” ফুল প্যাকেজ ছিলো সেদিন বইমেলায়(২৬ শে মার্চ)। জাতীয় চেতনার সাথে একুশে বই মেলা। তার পরের প্যাকেজটা তো আমার এখনো স্বপ্ন মনে হচ্ছে। প্রিয় লেখকের বই আর সাথে ছিলো তার স্নেহের পরশ। অহংকার মিশানো একটি অদ্ভুত কম্বিনেশন। অহংকার বলছি তার কারন আমার ছোট্ট দ্বীপ জেলার গর্ব যে লেখক তাঁর এতটা কাছে থেকে স্নেহের পরশ পাওয়াটা অহংকার ই বটে।
“অহনা” এক বন্ধনের নাম, ভালোবাসার এক ভাষা। প্রিয়জনের জন্য আত্মত্যাগের এক স্বচ্ছ চিত্র। গভীর আবেগ আর ভাবনা থেকে বের করে সময়ের দৌড়ে পাল্লা দিতে আহ্বান করেছেন “সময়” তে। আর প্যাঁচ-পাঁচালি তে তো লেখক কৌতুক রসে ভরিয়ে দিয়েছেন পাঠককে।
বইটি পড়ার আগেই বলেছিলাম একের ভিতর সব, পড়া শেষ করে ভাবছি এতটা কি করে হয়! সময়, ভাবনা আর পরিস্থিতি সবটাই যেন অহনা কে ঘিরেই।
দুই দিন আগে আবিদ হাসান নামের আরেকজন তার ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, বেশ কিছুদিন থেকে কোন কিছুতে ঠিকভাবে মনযোগ দিতে পারতেছিনা। বই পড়ে এই সমস্যা সমাধান হতে পারে তাই পড়া শুরু করলাম।
মাহবুব-উল-আলম চৌধুরীর বই দিয়েই শুরু করালম।
অহনা পড়ে শেষ করলাম। ৩ টা ছোট গল্প, বেশ ভালো মানের লিখা, বিশেষ করে অহনা গল্পটাতে বিজ্ঞান, আধুনিকতা, কুসংস্কার থেকে বেরিয়ে আসার যে বার্তা দেয়া হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে ভালোই
অহনা বইটি জনপ্রিয়তার বিষয়ে লেখক অনেকটা আত্মবিশ্বাস নিয়েই বলেছেন, অহনায় আছে তিনটি গল্পের মতো গল্প।
এই দায়সারা বাক্যের উত্তরে নিশ্চয়ই একটি গ্রন্থ সম্পর্কে আংশিক বা পূ্র্ণাঙ্গ জানা যায় না। তাই, আরও বিস্তৃত উত্তরে বলা যায়: অহনায় আছে ভিন্নধর্মী প্রেম, আছে আত্মত্যাগ, আছে সময়ানুবর্তিতা আর আছে শূন্য থেকে শিখরে ওঠার সংগ্রামের কথা।
লেখক বলেছেন, পাঠককে শুষ্ক বিনোদন দিয়ে অহনা তার দায় সারে নি। প্রতিটি গল্পের প্রত্যেকটি প্যারায় লেখক জোর দিয়ে বুঝিয়েছেন, এজন্য অহনার জন্ম নয়।
মাহবুব-উল-আলম চৌধুরীর পূর্ববর্তী গ্রন্থগুলোর মতো এ গ্রন্থেও যা যা মানুষকে স্পর্শ করে, তাকে ছোঁয়ার তীব্র এক প্রচেষ্টা পরিলক্ষিত হয়েছে। এ কাজে, তিনি কতটুকু সফল বা বিফল, তা বিচার করবার ভার পাঠকের স্বতন্ত্র রুচির।
কিন্তু বোদ্ধা পাঠক মাত্রই একথা বলতে বাধ্য, পাঠ শেষে অহনা পাঠককে ভাবতে শিখিয়েছে, প্রশ্ন করতে শিখিয়েছে আর প্রেরণা জুগিয়েছে সংগ্রামের।
অহনা ছাড়াও তার লেখা বস্তির নাম ৭৪২, লাল টিপ লাল শাড়ি, একজন স্বপ্নযাত্রী, ভালোবাসা কে জেনেছে তারে বইগুলো ও বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
লেখক মাহবুব-উল-আলম চৌধুরীর বই অহনা পাওয়া যাবে ভোলা সদর উপজেলার প্যারাডাইস বুক ডিপোতে এবং বোরহানউদ্দিন উপজেলার মা বই বিতান লাইব্রেরীতে।
মাহবুব-উল-আলম চৌধুরী ১৯৬৮ সালের ২৫ শে অক্টোবর ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার ঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বার মিয়া বাড়ির সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ভাষা সৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, সাবেক এমপি ও সংবিধান প্রণেতা মরহুম রেজা-এ-করিম চৌধুরী ( চুন্নু মিয়া) এর কনিষ্ঠ ছেলে। মাহবুব-উল-আলম চৌধুরী দীর্ঘ প্রায় তিন দশক ধরে বিমা পেশায় নিয়োজিত। পড়ালেখা করেছেন বরিশাল ও ঢাকায়।